৭৫, ৭০, ৪৪, ১২, ৮৭*—এবারের আইপিএলে নিকোলাস পুরানের রান। এই ইনিংসগুলো খেলার পথে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান ছক্কা মেরেছেন ২৪টি। বলে রাখতেই হচ্ছে, এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে ১৫টির বেশি ছক্কা মারতে পারেননি আর কেউ।
টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক (২৮৮) তিনি, মেরেছেন ২৫টি চারও। কমপক্ষে ১০০ রান করেছেন, এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটও (২২৫) তাঁর। আর কী চাই!
আইপিএলের এবারের মৌসুমে লক্ষ্ণৌ যে ধারাবাহিক পারফর্ম করছে, তার বড় কারণ এই পুরানই। ৫ ম্যাচের মধ্যে দলটি জিতেছে ৩টিতে।
পুরানের টুর্নামেন্ট শুরু হয় ২৪ বলের ফিফটিতে। দিল্লির বিপক্ষে সেই ম্যাচে পুরান করেন ৩০ বলে ৭৫ রান। তবে দিল্লির আশুতোষ শর্মার অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে জেতা ম্যাচটি হেরে যায় লক্ষ্ণৌ। ইনিংসের শেষ ১১ বলে ৫ ছক্কায় ৪৬ রান করে দলকে ১ উইকেটের জয় এনে দেন আশুতোষ।
দ্বিতীয় ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে পুরান ফিফটি করেন ১৮ বলে। সেই ইনিংসটিতে ২৫ বলের মধ্যে ১২টিতেই চার-ছক্কা মারেন এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার। পরের দুই ম্যাচে ফিফটি না পাওয়া পুরান কাল আবার ফিফটি পেলেন, খেললেন আইপিএলে ক্যারিয়ার–সেরা ৮৭ রানের ইনিংস। ২১ বলে ফিফটি পেয়েছেন।
হর্ষিত রানা, আন্দ্রে রাসেল থেকে সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী—সবাইকে ছক্কা মেরেছেন পুরান। তাঁর এমন ইনিংসেই রান উৎসবের ম্যাচে ৪ রানের জয় এনে দিয়েছে লক্ষ্ণৌকে।
পুরান এমন ছক্কা উৎসব এ বছরই যে শুরু করেছেন, তা নয়। গত বছর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সব মিলিয়ে ছক্কা মেরেছিলেন ১৭০টি, যা এক পঞ্জিকাবর্ষে ছক্কার রেকর্ড। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কা ছিল হাইনরিখ ক্লাসেনের, ১০৫টি। এই বছরও সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছক্কা এসেছে পুরানের ব্যাট থেকে, ৪১টি। যেভাবে খেলছেন, এবারও হয়তো ১০০–এর বেশি ছক্কা মারবেন এই ক্রিকেটার। আর সেটি হলে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে একাধিকবার ১০০ ছক্কা মারবেন পুরান।
১৭০
পুরানের গত বছরের ছক্কা সংখ্যা
পুরান ও ক্লাসেন ছাড়া এখন পর্যন্ত এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কা মেরেছেন ক্রিস গেইল ও আন্দ্রে রাসেল। তবে গেইলের নামটা একটু আলাদা করে বলার দাবি রাখে। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের তর্কযোগ্যভাবে সেরা ব্যাটসম্যান এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কা মেরেছেন ৬ বার।
এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কার কীর্তি প্রথমবার দেখা যায় ২০১১ সালে। সেই বছর গেইল ছক্কা মারেন ১১৬টি। এর পরের দুই বছরও ১০০ ছক্কার বেশি মারেন এই ওপেনার। মাঝে ২০১৪ বাদ দিয়ে আবার ন্যূনতম ১০০টি করে ছক্কা মারেন ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে।
গেইলের পর এ তালিকায় নাম লেখান আন্দ্রে রাসেল। তিনি ২০১৯ সালে ছক্কা মারেন ১০১টি। এত বছর ধরে ধারাবাহিক বিধ্বংসী ব্যাটিং করার পরও মাত্র একবারই এক পঞ্জিকাবর্ষে ছক্কার সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন রাসেল। আরেক টি-টোয়েন্টি কিংবদন্তি কাইরন পোলার্ড তো এই কীর্তি কোনো দিন করতেই পারেননি। এই পরিসংখ্যানে গেইলে মাহাত্ম্যটা আরও বেশি করে বোঝ যায়। গেইলের পর তাঁর মতো হেসেখেলে ছক্কা মারছেন আরেক বাঁহাতি পুরান। দেখা যাক, তিনি বছরে ১০০ ছক্কা কতবার মারতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন